بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِِ
২২ মে, ২০২০
ইবাদত, দোয়া এবং পুণ্যকর্মের অভ্যাস গড়ে তোলা ও ধরে রাখার গুরুত্বারোপ
মসজিদ মুবারক, ইসলামাবাদ, টিলফোর্ড, লন্ডন
  • সারমর্ম
    এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

    আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্‌ হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) গত ২২শে মে, ২০২০ ইসলামাবাদের মসজিদে মুবারকে প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় রমযান মাসে জামাতের সদস্যদের মাঝে ইবাদত, দোয়া এবং পুণ্যকর্মের যে অভ্যাস গড়ে উঠেছে তা ধরে রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।


    তাশাহহুদ, তাআ’ব্বুয ও সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর (আই.) প্রথমে তার সাম্প্রতিক অসুস্থতার প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী জামাতের সদস্যদের দোয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, সর্বপ্রথম আমি সকল আহমদীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চাই, যারা সম্প্রতি আমি পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়ার কারণে অসাধারণ সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং অত্যন্ত ব্যাকুলচিত্তে দোয়া করেছেন; আল্লাহ্ তা’লা আপনাদের সবাইকে এর সর্বোত্তম প্রতিদান দিন আর খিলাফতের প্রতি আপনাদের নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করুন, (আমীন)।


    হুযূর বলেন, এ যুগে আল্লাহ্‌র নির্দেশে ও আল্লাহ্‌র খাতিরে নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও বিশেষভাবে যুগ-খলীফার প্রতি নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার এই উপমা একমাত্র আহমদীয়া জামাতেরই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। আর খিলাফত ও জামাতের মধ্যে এই দ্বিপাক্ষিক ভালোবাসা আল্লাহ্ তা’লাই সৃষ্টি করেছেন; এটি এমন এক সম্পর্ক যার উপমা পার্থিব কোন সম্পর্কের মাঝে খুঁজে পাওয়া ভার। হুযূর বলেন, খলীফাতুল মসীহ্ সালেস (রাহে.)’র এই উক্তি আমার খুবই প্রিয়- ‘যুগ-খলীফা ও জামাত আসলে একই সত্তার দু’টি নাম’। আহমদীদের দোয়া গৃহীত হওয়ার ফলেই আল্লাহ্ তা’লার কৃপায় অসাধারণ দ্রুততার সাথে ক্ষতগুলো সেরে উঠেছে। ডাক্তার সাহেব হুযূরকে বলেছেন, মুখমন্ডলের সাধারণত আঘাত দ্রুত সেরে যায়, কিন্তু এই ক্ষত যে এত দ্রুত সেরে যাবে তা তিনিও ভাবেন নি। হুযূর নিজেও ভেবেছিলেন- সারতে হয়তো সপ্তাহ দুয়েক সময় লাগবে, আর তারপরও হয়তো আঘাতের চিহ্ন থেকে যাবে; কিন্তু আল্লাহ্ তা’লার কৃপায় ৭-৮ দিনেই সব ঠিক হয়ে গিয়েছে। হুযূর ক্ষতস্থানে সুরিয়ানী ‘মারহামে ঈসা’ও লাগিয়েছেন, যা মীর মাহমুদ আহমদ নাসের সাহেব রাবওয়া থেকে প্রস্তুত করে পাঠিয়েছিলেন, আর হোমিওপ্যাথিক ক্যালেন্ডুলা মলমও ব্যবহার করেছেন। ঔষধগুলোর নাম হুযূর সর্বসাধারণের উপকারার্থে উল্লেখ করেন আর বলেন, আরোগ্য মূলত আল্লাহ্ তা’লাই দান করেন। হুযূর দোয়ার আবেদন করেন, আঘাতের অন্যান্য যে ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে তা-ও যেন আল্লাহ্ তা’লা দ্রুত দূর করে দেন, (আমীন)। হুযূর বলেন, আসল জিনিস হল আল্লাহ্ তা’লার কৃপা- যা আমাদের সর্বদা প্রার্থনা করতে থাকা উচিত।


    হুযূর বলেন, বর্তমানে আমরা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছি, এরূপ পরিস্থিতিতে বিশেষভাবে আল্লাহ্ তা’লার প্রতি বিনত হওয়া প্রয়োজন। যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশগুলো থেকে যে রিপোর্ট আসছে, তাত্থেকে প্রতীয়মান হয়, এই পরিস্থিতিতে আল্লাহ্ তা’লার প্রতি বিনত হওয়ার ক্ষেত্রে জামাতের সদস্যগণ অধিক মনোযোগী হয়েছেন। লকডাউনের মধ্যে বাড়িতে বাজামাত নামায হচ্ছে; কুরআন, হাদীস ও অন্যান্য বইয়ের দরস হচ্ছে- যার ফলে বড়দেরও জ্ঞান বৃদ্ধি পাচ্ছে, একইসাথে ছোটরাও ধর্মীয় জ্ঞানের বিষয়ে অবগত হতে পারছে; সার্বিকভাবে আল্লাহ্ তা’লার প্রতি ঈমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। আল্লাহ্‌র কৃপায় এরই মধ্যে রমযান মাস এসে যায়- ফলে ইবাদতের প্রতি সবার যে মনোযোগ নিবদ্ধ হচ্ছিল- তা আরও বৃদ্ধি পায়। এখন তো রমযানও সমাপ্তির পথে, আর বিভিন্ন দেশের সরকারও দীর্ঘ লকডাউন এখন কিছুটা শিথিল করছে। শিথিলতার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে যেসব শর্ত আরোপ করা হচ্ছে, সেগুলো প্রত্যেক আহমদীর মেনে চলা আবশ্যক; কিন্তু যে বিষয়টি প্রত্যেক আহমদীর সর্বাগ্রে দৃষ্টিপটে রাখতে হবে তা হল, লকডাউনের শিথিলতা কিংবা রমযানের সমাপ্তি যেন আমাদের ইবাদত বা নতুন রপ্ত করা পুণ্যের ক্ষেত্রে শৈথিল্যের কারণ না হয়। লকডাউন থাকাকালীন বাড়িতে বাজামাত নামায, মসজিদে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলে নামাযের জন্য মসজিদে উপস্থিত হওয়া এবং বাড়িতে মহিলাদের নামায প্রতিষ্ঠিত রাখা, সংক্ষিপ্ত আকারে হলেও দরস প্রদান, সবাইকে নিয়ে এমটিএ দেখা- এগুলো সবই চলমান রাখতে হবে। একজন আহমদী- যিনি হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-কে মান্য করে নিজের মাঝে পবিত্র পরিবর্তন সাধনের অঙ্গীকার করেছেন, ধর্মকে পার্থিবতার ওপর অগ্রাধিকার প্রদানের অঙ্গীকার করেছেন- তার জন্য কখনো বয়আতের অঙ্গীকার ভুলে যাওয়াটা সমীচীন নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ তা’লা কিছু মানুষের উল্লেখ করেছেন যারা বিপদে পড়লে আল্লাহ্কে ব্যাকুল হয়ে ডাকে, কিন্তু যখন বিপদ দূর হয়ে যায় তখন আল্লাহ্‌কে ভুলে যায়; একজন মুমিনের কখনোই এমনটি করা উচিত নয়।


    হুযূর বলেন, আজকাল মানুষ এই আলোচনায় রত যে, এই করোনা ভাইরাস প্রাকৃতিক দুর্যোগ নাকি ঐশী শাস্তি; তারা হযরত খলীফাতুল মসীহ্ রাবে (রাহে.)’র ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ নাকি ঐশী শাস্তি’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধের সাথে এটিকে একীভূত করার চেষ্টা করে। অথচ একজন খাঁটি মু’মিনের এমন পরিস্থিতিতে এই বিতর্কে না জড়িয়ে আল্লাহ্‌র প্রতি আরও বেশি বিনত হওয়া উচিত। এ যুগে যে বিপদই আপতিত হচ্ছে, তার সাথে মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর যুগের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে; যদি এই মহামারীর মাঝেও কোন সতর্কবাণী থেকে থাকে, তাহলে একজন মু’মিনের সর্বপ্রথম আল্লাহ্‌র ভয়ে কম্পিত হওয়া উচিত। ইতিহাস থেকে জানা যায়, হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) তাঁর যুগে নিদর্শন হিসেবে আপতিত প্লেগে আক্রান্তদের জন্যও এরূপ ব্যাকুলচিত্তে, কেঁদে কেঁদে দোয়া করতেন যে শুনে মনে হতো যেন হাঁড়িতে পানি ফুটছে। তাই আমাদের নিজেদের ঈমান ও বিশ্বাস বৃদ্ধির জন্য ও শুভ পরিনামের জন্যও দোয়া করা উচিত, সেইসাথে পৃথিবীবাসী যেন এই ভয়াবহ মহামারীর প্রকোপ থেকে রক্ষা পায়- সেজন্যও ব্যাকুলচিত্তে দোয়া করা উচিত। খলীফাতুল মসীহ্ রাবে (রাহে.)’র এই প্রবন্ধের যে কথাটি সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য তা হল- আহমদীয়া জামাতের জন্য এসব দুর্যোগের মধ্যে সুসংবাদ ও সতর্কবাণী- দু’টোই রয়েছে; সতর্কবাণী হল- কেবল আহমদীয়াতের তকমা এঁটে আত্মপ্রসাদ নেওয়াই আমাদের মুক্তির জন্য যথেষ্ট নয়, বরং তাক্ওয়ার শর্তও প্রযোজ্য। আর সুসংবাদ হল, জামাতের ব্যবহারিক অবস্থায় যেসব দুর্বলতা সৃষ্টি হবে, আহমদীরা যেন দ্রুত তা দূর করতে সচেষ্ট হয়। তাই আহমদীদের নিজেদেরকেও এবং নিজেদের সন্তানদেরও আল্লাহ্ ও বান্দার প্রাপ্য অধিকার প্রদানের প্রতি মনোযোগী করতে হবে; কেননা ধ্বংসযজ্ঞের পর পৃথিবীর দৃষ্টি যখন আল্লাহ্‌র প্রতি নিবদ্ধ হবে, তখন তারা এগুলো শেখার জন্য আহমদীয়া জামাতেরই শরণাপন্ন হবে। কিন্তু এর পূর্বে আমাদের বেদনার সাথে এই দোয়া করতে থাকা উচিত- বিশ্বাবাসী যেন অবাধ্যতার চরম সীমায় চলে না যায় যেখান থেকে ফেরা অসম্ভব, এর পূর্বেই যেন তারা আল্লাহ্‌র পানে প্রত্যাবর্তন করে। দোয়া ও নিজেদের আদর্শ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি পৃথিবীবাসীকে আল্লাহ্ ও সত্যধর্মের প্রতি আহ্বান জানানোও আমাদের দায়িত্ব।


    হুযূর বলেন, আল্লাহ্‌র কৃপায় জামাতের সদস্যরা বর্তমানে একদিকে যেমন ইবাদতের প্রতি মনোযোগী হচ্ছে, অন্যদিকে তারা সৃষ্টির সেবায়ও অগ্রগামী রয়েছে, যার যথেষ্ট সুপ্রভাবও পড়ছে এবং ক্ষেত্রবিশেষে পথহারাদের আল্লাহ্‌র পথের দিশা লাভেরও কারণ হচ্ছে। প্রসঙ্গতঃ হুযূর কানাডার একটি ঘটনাও উল্লেখ করেন যে কীভাবে একজন স্রষ্টার অস্তিত্বে অবিশ্বাসী ব্যক্তি এক আহমদী যুবকের সৃষ্টিসেবার ফলে স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। হুযূর বলেন, তাই আমাদের বসে বসে এটা দেখা উচিত না যে ধ্বংসযজ্ঞ আসে কি-না, বরং অন্যদের কষ্টে সমব্যথী হয়ে তাদের সেবায় রত হওয়া উচিত; এটি রমযানেরও অন্যতম উদ্দেশ্য। আর অন্যের দুর্বলতার প্রতি দৃষ্টি দেয়ার পরিবর্তে আমাদের সর্বদা আত্মবিশ্লেষণ করতে থাকা উচিত। হুযূর হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর কতিপয় প্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতিও উপস্থাপন করেন যেগুলোতে তিনি (আ.) জামাতের সদস্যদেরকে আল্লাহ্ তা’লার সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিবিড় করা, সৃষ্টজীবের নিঃস্বার্থ সেবা, ব্যক্তিগত বিদ্বেষ, শত্রুতা ও তাচ্ছিল্য পরিহার, উন্নত চারিত্রিক গুণাবলী রপ্তকরণ এবং মহানবী (সা.)-এর পরিপূর্ণ আদর্শ অনুসরণের নির্দেশ প্রদান করেছেন। এসব উদ্ধৃতির আলোকে হুযূর (আই.) বলেন, আমরা হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর হাতে বয়আত গ্রহণের মাধ্যমে মহানবী (সা.)-এর প্রকৃত অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছি; আর আমাদের উন্নতিও এতেই নিহিত- অর্থাৎ, আমরা যেন মহানবী (সা.)-এর প্রকৃত অনুসারী হই এবং যথাসাধ্য তাঁর পূর্ণাঙ্গীন আদর্শ ও নির্দেশাবলী পালনে সচেষ্ট হই।


    খুতবার শেষদিকে হুযূর বেশকিছু দোয়ার তাহরীক করেন। প্রথমতঃ ‘আসিরানে রাহে মওলা’ বা আল্লাহ্‌র পথে বন্দীদের মুক্তির জন্য দোয়ার তাহরীক করেন; পাকিস্তানে সম্প্রতি এক আহমদী ভদ্রমহিলার বিরুদ্ধে রসূল অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে মামলা করা হয়েছে, তাকে এবং অনুরূপ মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তদের সর্বদা হুযূর দোয়ায় স্মরণ রাখতে বলেন, আল্লাহ্ তা’লা যেন তাদের সবার অলৌকিকভাবে মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন। হুযূর দোয়া করেন, আল্লাহ্ তা’লা আমাদের প্রত্যেককে হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর আগমনের উদ্দেশ্য অনুধাবন করার তৌফিক দিন, আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল হযরত খাতামুল আম্বিয়া মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি আমাদের ভালোবাসা যেন সব ভালোবাসার চেয়ে অধিক হয়, আমরা যেন ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা পালনকারী হই; হুযূর সকল জীবনোৎসর্গকারী, ওয়াক্‌ফে নও, আহমদীয়াতের শহীদগণ, এমটিএ’র কর্মীবৃন্দ, সকল বিপদগ্রস্ত আহমদী, অসুস্থদের পূর্ণ আরোগ্য এবং বিবাহ উপযুক্ত মেয়েদের সত্বর বিয়েশাদী, সমগ্র মুসলিম বিশ্ব এবং সার্বিকভাবে সমগ্র মানবজাতির জন্য দোয়ার তাহরীক করেন।


    এরপর হুযূর পবিত্র কুরআন, মহানবী (সা.) ও হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর নিম্নোক্ত দোয়াগুলো পাঠ করেন এবং সবাইকে তাঁর সাথে তা পুনরাবৃত্তি করতে বলেন;


    **اَللّٰھُمَّ اِنَّا نَجْعَلُکَ فِیْ نُحُورِھِمْ وَنَعُوْذُبِکَ مِنْ شُرُوْرِھِمْ**


    অর্থ: হে আমার আল্লাহ্! আমরা (অবিশ্বাসীদের মোকাবিলায়) তোমাকে তাদের অন্তরে (ঢালস্বরূপ) রাখছি আর তাদের অনিষ্ট থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।


    **لَا إلٰہَ إلَّا اللہُ الْعَظِیْمُ الْحَلِیْمُ،لَا إلٰہَ إلَّا اللہُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِیْمِ،لَا إلٰہَ إلَّا اللہُ رَبُّ السَّمٰوَاتِ وَرَبُّ الْأَرْضِ َورَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِیْمِ**


    অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনি মহান ও পরম সহিষ্ণু। আল্লাহ্ ব্যতিরেকে কোন উপাস্য নেই। তিনি মহান আরশের প্রভু-প্রতিপালক। আল্লাহ্ ব্যতিরেকে কোন উপাস্য নেই। তিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর প্রভু আর মহান আরশেরও প্রভু।


    **یَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّت قَلْبِیْ عَلٰی دِیْنِکَ**


    অর্থ: হে হৃদয়সমূহের পরিবর্তনকারী! আমার হৃদয়কে তোমার ধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখ।


    **اَللّٰھُمَّ اِنِّی اَسْئَلُکَ الْھُدیٰ وَالتُّقیٰ وَالْعَفَافَ وَالْغِنیٰ**


    অর্থ: হে আমার আল্লাহ্! নিশ্চয় আমি তোমার কাছে হিদায়াত (তথা সুপথ), তাক্বওয়া (তথা তোমার ভয়, ভক্তি, ভালোবাসা), হৃদয়ের পবিত্রতা এবং সার্বিক প্রাচূর্য প্রার্থনা করছি।


    **اَللّٰھُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ وَجَمِيعِ سَخَطِكَ**


    অর্থ: হে আমার আল্লাহ্! আমি তোমার তোমার আশ্রয় চাই তোমার নিয়ামতরাজি ধ্বংস হওয়া থেকে, তোমার নিরাপত্তার আশ্রয় হতে বঞ্চিত হওয়া থেকে, তোমার আকস্মিক শাস্তি থেকে এবং এমন সব বিষয় থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেগুলোর প্রতি তোমার অসন্তুষ্টি বিরাজমান।


    **رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ**


    অর্থ: হে আমাদের প্রভু! নিশ্চয় আমরা আমাদের প্রাণের ওপর অন্যায় করেছি; আর যদি তুমি আমাদেরকে ক্ষমা না কর ও আমাদের প্রতি করুণা না কর তা’হলে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।


    **رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً ۚ إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ**


    অর্থ: হে আমাদের প্রভু-প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শনের পর আমাদের হৃদয়কে বক্র হতে দিও না, আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদেরকে প্রভূত কল্যান দান কর, নিশ্চয় তুমিই মহান দাতা।


    **رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ**


    অর্থ: হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে ইহকাল এবং পরকালের কল্যাণ দান কর। আর আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।


    হযরত মসীহ্ মওউদ (আই.)-এর যে দোয়াটি হুযূর পাঠ করেন তা হল:**


    اے رب العالمین میں تیرے احسانوں کا شکریہ ادا نہیں کر سکتا۔ تو نہایت ہی رحیم و کریم ہے۔ تیرے بے نہایت مجھ پر احسان ہیں۔ میرے گناہ بخش تا میں ہلاک نہ ہو جاؤں۔میرے دل میں اپنی خالص محبت ڈال تا مجھے زندگی حاصل ہو اور میری پردہ پوشی فرما اور مجھ سے ایسے عمل کرا جن سے تو راضی ہو جائے۔ میں تیرے وجہہ کریم کے ساتھ اس بات سے بھی پناہ مانگتا ہوں کہ تیرا غضب مجھ پر وارد ہو۔ رحم فرما رحم فرما رحم فرما اور دنیا و آخرت کی بلاؤں سے مجھے بچا کیونکہ ہر ایک فضل و کرم تیرے ہی ہاتھ میں ہے۔ آمین**


    অর্থাৎ, হে জগতসমূহের প্রভু-প্রতিপালক! আমি তোমার কৃপাসমূহের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার সামর্থ্য রাখি না। তুমি অত্যন্ত কৃপাকারী ও দয়ালু। আমার প্রতি তোমার অনুগ্রহ অসীম। আমার পাপসমূহ ক্ষমা কর যেন আমি ধ্বংস না হয়ে যাই। আমার হৃদয়ে তোমার খাঁটি ভালোবাসা সৃষ্টি কর যেন আমি জীবন লাভ করি আর আমার দোষত্রুটি গোপন রাখো আর আমার মাধ্যমে এমন কাজ করাও যাতে তুমি সন্তুষ্ট হবে। আমি তোমার দয়ার দোহাই দিচ্ছি! তোমার ক্রোধ যেন আমার প্রতি আপতিত না হয়, আমার প্রতি কৃপা কর। কৃপা কর। কৃপা কর আর ইহকাল ও পরকালের বিপদাবলী থেকে আমাকে রক্ষা কর কেননা, সব ধরনের কৃপা ও দয়া তোমার হাতেই রয়েছে। (আমীন)


    দরূদ শরীফ:


    **اللھم صل علیٰ محمد وعلیٰ اٰل محمد کما صلیت علیٰ ابراھیم وعلیٰ اٰل ابراھیم انک حمید مجید۔ اللھم بارک علیٰ محمد وعلیٰ اٰل محمد کما بارکت علیٰ ابراھیم وعلیٰ اٰل ابراھیم انک حمید مجید۔**


    অর্থাৎ, হে আমার আল্লাহ্! অনুগ্রহ বর্ষণ কর মুহাম্মদ (সা.) এবং মুহাম্মদ (সা.) এর অনুগামীদের প্রতি যেরূপ তুমি অনুগ্রহ বর্ষণ করেছিলে ইবরাহীম (আ.) এবং ইবরাহীম (আ.)-এর অনুগামীদের প্রতি। নিশ্চয় তুমি মহা-প্রশংসিত, মহা-মর্যাদাবান। হে আমার আল্লাহ্! কল্যাণ বর্ষণ কর মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর অনুগামীদের প্রতি যেরূপ তুমি কল্যাণ বর্ষণ করেছিলে ইবরাহীম (আ.) তাঁর অনুগামীদের প্রতি। নিশ্চয় তুমি মহা-প্রশংসিত, মহা-মর্যাদাবান।


    খুতবার শেষদিকে হুযূর দোয়া করে বলেন, আল্লাহ্ তা’লা রমযানে আমাদের মাধ্যমে যেসব পুণ্যকর্ম সাধিত হয়েছে বা আমাদের মাঝে যেসব পবিত্র পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, সেগুলো অটুট ও চলমান রাখার তৌফিক দান করুন এবং এসব দোয়াও আমাদের পক্ষে কবুল করুন। (আমীন)

  • পুর্নাঙ্গ অনুবাদ
বিষয়ঃ
শেয়ার করুনঃ
অন্যান্য বিষয়ভিত্তিক খুতবা